মোনঘর আবাসিক বিদ্যালয়

স্থাপিত: ১৯৮০ খ্রিঃ. EIIN: 107792, Institute Code: 0410031301
ঠিকানা-রাঙ্গাপানি, রাঙ্গামাটি, ফোন : 0351-61043, ই-মেইল : info@mors.edu.bd

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত

প্রকাশিত হয়েছে: ২৬ মার্চ ২০২৩ | পড়া হয়েছে 941 বার

২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে মোনঘর আবাসিক বিদ্যালয়ের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়। সকাল ৭:৩০টায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিশির কান্তি চাকমা, প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী প্রধান শিক্ষক অরূপন বিকাশ বড়ুয়ার নেতৃত্বে শিক্ষকমন্ডলী ও ছাত্র-ছাত্রীরা একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনতে অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন সেসব শহীদের স্মরণে বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পন করেন। তারপর জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও শিক্ষার্থীদের প্রাত্যহিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এরপর প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে শিক্ষকমন্ডলী, স্কাউট ও গার্লস গাইড দল মোনঘর আবাসিক বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে রাঙ্গামাটিস্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ম্যূরালে পুষ্পমাল্য দেওয়া হয়। একই সাথে মোনঘরের পক্ষ থেকেও সংস্থার নির্বাহী পরিচালক অশোক কুমার চাকমার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু ম্যূরালে পুষ্পমাল্য অর্পন করা হয়।

এদিকে ২৫ মার্চ, গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে বিদ্যালয়ের উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) শিশির কান্তি চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রীতি কান্তি ত্রিপুরা। উক্ত আলোচনা সভায় সংস্থার নির্বাহী পরিচালক অশোক কুমার চাকমা ও সহকারী প্রধান শিক্ষক অরূপন বিকাশ বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রীতি কান্তি ত্রিপুরা কীভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে কোথায় কোথায় অপারেশন চালিয়েছিলেন সেসব কাহিনী শিক্ষার্থীদের শোনান। তিনি বলেন, ১ নং সেক্টরে বিশেষতঃ বান্দরবান ও চট্টগ্রাম এলাকায় তিনি ও তাঁর সহযোদ্ধারা পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। একাত্তরে তিনি কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছিলেন। তিনি কেন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন সেই ব্যাপারে বলতে গিয়ে বলেন, ‘তৎকালীন সময়ে পাকিস্তানে ৫টি প্রদেশ ছিলো। সেগুলোর মধ্যে পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) একটি। পাকিস্তানে অন্য চারটি প্রদেশের মোট জনসংখ্যার চেয়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যা বেশি হলেও পাঠান পাঞ্জাবীরা এদেশের উন্নয়নে বরাদ্দ দিতো না। তারা আমাদের সব সময় শোষণ করতো, বঞ্চিত করতো। এদেশের মানুষকে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিলো। পাকিস্তানীদের শোষণ বঞ্চণা ও শৃংখল থেকে মুক্ত হওয়ার লক্ষ্যে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রীতি কান্তি ত্রিপুরা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার আপামর জনসাধারণের মধ্যে মুক্তির আকাংখা জাগিয়ে দিয়েছিলেন। সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তিনি আরো বলেন, সোনার বাংলা মানে সোনায় মোড়ানো দেশ নয়। সোনার বাংলা মানে হলো বাংলার আপামর মানুষের মৌলিক চাহিদা – অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা। এদেশের মানুষ যাতে খেয়ে পরে মৌলিক অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকতে পারে, মর্যাদার সাথে জীবন গড়তে পারে সেটাই ছিলো সাধারণ মানুষের চাওয়া। কিন্তু পাকিস্তানীরা সেই অধিকার কেড়ে নিয়েছিলো। তাই মুক্তিযুদ্ধ করতে হয়েছিলো।

তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নানাভাবে ভূলণ্ঠিত করার প্রয়াস চলছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে অবশ্যই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে এবং এই সংগ্রামে  আজকের শিক্ষার্থীরা আগামী দিনে নেতৃত্ব দেবে – তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে সেই আশাবাদ রাখেন।

মন্তব্য...

comments

আরো নিউজ ও ইভেন্ট